রিফাত হত্যাকরী নয়নকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য বরগুনার এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর!

বরগুনার রিফাত হত্যার অন্যতম প্রধান আসামী (নয়ন) আমার এলাকার ছেলে, তবে সে এত বড় মাদক কারবারী তা আমার জানা ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। স্ত্রীর সামনে নারকীয় এই হত্যাকাণ্ড যারা প্রকাশ্যে দিবা লোকে ঘটিয়েছেন তাদের বিষয়ে বুধবার (২৬ জুন) রাতে দেশের একটি বেসরকারি টেলিভশনের সাথে ফোনাআলাপে এসব কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু।

স্থানীয় এই সংসদ সদস্য বলেন, সে (নয়ন) আমার এলাকারই ছেলে। সে যে এমন নারকীয় ঘটনা ঘটাতে পারে তা আমি কল্পনাও করতে পাচ্ছি না। যুব সমাজ হঠাৎ করে কিভাবে এমন বর্বর হয়ে যাচ্ছে আপনাদের মত আমারও প্রশ্ন। সে যে মাদক ব্যবসা করে তা আমি জানতাম না। তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে একথাও বলেন তিনি। এই অপরাধের শাস্তি তাকে পেতেই হবে।

সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা প্রশ্ন করেন, পুলিশ বলছে নয়নের বিরুদ্ধে ১০ থেকে ১২টি মামলা রয়েছে। সে ওই এলাকার সবচেয়ে বড় মাদক ব্যবসায়ী। মাদকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র এতো বড় একটা যুদ্ধ ঘোষণা করছে অথচ আপনার এলাকায় এতো বড় এক মাদক ব্যবসায়ী কেমনে রয়ে গেল এবং সে লোহমর্ষক কাণ্ড ঘটিয়ে বসলো। আর আপনি কিছুই জানলেন না, কী করে তা সম্ভব?

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মিথিলা ফারজানাও সংসদ সদস্যকে একই প্রশ্ন করেন, কারা মাদক ব্যবসায়ী একথা যদি নাই বা জানা যায় তাহলে সারাদেশে এ রকম যেসব মাদক ব্যবসায়ী আছে তাদের ক্ষেত্রে সরকার জিরো টলারেন্স কীভাবে বাস্তবায়ন করবে?

এমন প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সংসদ সদস্য পুলিশের ওপর দোষারোপ করে বলেন, আমি খুব আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি, বরগুনার মত ছোট্ট শহরে কী করে এত বড় একজন অপরাধী ঘুরে বেড়ায়? নিশ্চয়ই এ ব্যাপারে পুলিশের আরো বেশি তৎপর হওয়া উচিত ছিল। এখানে পুলিশ প্রশাসনের গাফলতি দৃশ্যমান বলেই জানান তিনি।

এমন নারকীয় ঘটনার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য হিসেবে জরুরি ভিত্তিতে এলাকায় যাবেন কিনা জানতে চাইলে শম্ভু জানান, পার্লামেন্টে আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত কাজ আছে বলে আজ তিনি যেতে পারবেন না। তবে আগামীকাল নিহতের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, বুধবার (২৬ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবা লোকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে রিফাত শরীফ (২৫) নামে এক যুবককে গুরুতর আহত করে। এরপর বীরদর্পে সন্ত্রাসীরা অস্ত্র উঁচিয়ে ভয়ডরহীন ভাবে এলাকা ত্যাগ করে। এসময় আশপাশে অসংখ্য লোক তাদের এই নৃশংসতা চর্ম চক্ষু দিয়ে দেখেছে, কেউ আসেনি বলে জানান নিহতের স্ত্রী মিন্নি। গুরুতর আহত রিফাত বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এই হামলার ভিডিওচিত্র ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশেবাসী ক্ষোভে ফুঁসছে এমন লোহমর্ষক ঘটনায়। নিহত রিফাত শরীফ সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের দুলাল শরীফের ছেলে।

বাংলাদেশ জার্নাল